Mystery of Illuminati
ইলুুমিনাতি কি?
ইলুমিনাতি একটি ইহুদি নিয়ন্ত্রিত গুপ্ত সংগঠনের নাম। যারা লুসিফার নামক শয়তানের পূজোক, আবার তারা একচোখ বিশিষ্ট দেবতাকে (দাজ্জাল) ঈশ্বর হিসেবে মানে, তারা তার আগমনকে তরান্বিত করতেই বিশ্বব্যাপী পাপ কাজ কে ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন কৌশলে, তারা বলে থাকে ঐ এক চোখ ওয়ালা ঈশ্বর পৃথিবীতে আগমন করে সারা বিশ্ব ব্যপি তাদের একক রাজত্ব কায়েম করবেন। সে খুব অচিরেই আত্ন প্রকাশ করবেন। তারা বিশ্বাস করে ঐ এক চোখ ওয়ালা ঈশ্বর বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে অবস্থান করে বিশ্ব ব্যাপি নজরদারি করছে। তাই তারা তাদের মূল প্রতীক হিসেবে ত্রিভুজ আকৃতি বা পিরামিডের মাথায় এক চোখ ব্যবহার করে, তার জলন্ত উদাহরন আমেরিকার এক ডলার। বলা হয়ে থাকে, ১৭৭৬ সালের ১ মে ব্যাভারিয়া তে অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট এই সংগঠন টি প্রতিষ্ঠা করেন, কিন্তু ইলুমিনাতির ভাবনা আসলে তারও আগে থেকে। ১৭৭০ সালে ‘এমশেল মেয়ার রথসচাইল্ড’ ইউরোপীয় ব্যাংকার সিন্ডিকেট কে নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। পড়ে ১৭৭৬ সালে এই দলটি অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট কে নিয়োগ দেয় দলটি পুনর্গঠিত করতে। অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট দলটিকে একদম নতুন একটি দল হিসেবে প্রকাশ ঘটান। তিনি এর নাম দেন অর্ডার অফ ইলুমিনাতি।
আসলে এদের বাস্তব অস্তিত্ব নাথাকলেও এদের উপস্থিতি অনেকেই স্বীকার করে থাকেন। শয়তানের সাথে নিজের আত্মার বিনিময়ে করা চুক্তি যার ফলে সে এই জীবনে যা চায় চাই পায়, কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরে মৃত্যুবরন করে আর মৃত্যুর পর তার আত্মা শয়তানের অধিনে চলে যায়। এর সাথে জড়িয়ে আছে বিশ্বের সব থেকে নাম করা কম্পানি আর সব থেকে নাম করা তারকারা। এরা একটি সিক্রেট গ্রুপের মাধ্যমে তাদের কার্যাবলী সম্পাদন করে। এই গ্রুপটিই illuminati নামে পরিচিত। এই গ্রুপটি তাদের প্রভুর(শয়তানের) নিকট হতে নির্দেশনা পায়। এদের উদ্দেশ্য হল পৃথিবীতে বিরাজিত সকল ধর্মীয় অনুশাষন ভেঙ্গে সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে তাদের তৈরী এক নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। সমকামিতা, যৌনতা, ব্যাক্ত-স্বাধীনতা, আত্ম-হত্যাকে বৈধতা দান, উন্মুক্ত সংস্কৃতি র প্রসার, তথা-কথিত গনতন্ত্র, অবাধ দৈহিক সম্পর্ক, নতুন ব্যাংকিং ব্যবস্থা যা ধর্ম স্বীকৃত নয় এসব কিছুর মা্ধ্যমে মানুষকে সৃষ্টিকর্তার পথ হতে বিচ্যুত করাই এদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। শয়তানের নির্দেশনা অনুসারে এসব কিছুর মাধ্যমে পৃথিবীতে এমন অবস্থা তৈরী করা যাতে পৃথিবীতে তাঁর (ঘৃণা অর্থে) রাজত্ব ও প্রভুত্ব কায়েম হয়। তাদের ভাষায় সর্বজনীন, ন্যয় ও সাম্যের পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হয়। কী ? আপনাদের মনে ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর সেই ভবিষ্যত বানী ‘এক চোখা কানা দাজ্জ্বাল এর মনে ভেসে উঠে না?
ইলুুুমিনাতির উদ্দেশ্যঃ
এদের প্রধান উদ্দেশ্য হল ‘ওয়ান অর্ডার ওয়ার্ল্ড’ অর্থাৎ শুধুমাত্র তাদের সিদ্ধান্তেই যেন পৃথিবী চলে। আর এটি বাস্তবায়ন করার জন্য তারা ইতিমধ্যে অনেক রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। ধারণা করা হয়, অনেক প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় এসেছেন ইলুমিনাতির সহায়তাই। আর ইলুমিনাতি তাদের পুতুলের মত ব্যবহার করে। এও ধারণা করা হয়, অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও কর্মকাণ্ডের পিছনে এর হাত রয়েছে।
ইলুুুমিনাতির ইতিহাস :
এটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে কখন এই সিক্রেট সোসাইটি প্রথম সংগঠিত হয়। তবে সুমেরীয় সভ্যতার কীলকাকার ফলক (Sumerian cuneiform tablet) থেকে এটি অনুমান করা হয় যে খ্রিস্টপূর্ব পঁচিশ শত বছরে সিক্রেট সোসাইটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু আমরা জানি মিশরের ফেরাউন হ্যাটসেপসাট ( Hatshepsut ) পনেরশ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরি এবং এই গ্রুপটাই আধুনিক সিক্রেট সোসাইটির সংজ্ঞা অনুসরণ করে। অর্থাৎ মিশরীয় সভ্যতার এলিটদের কার্যকলাপের সাথে বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর মিল পাওয়া যায়। তৎকালীন এলিটরা গোপনে কার্যসম্পাদন করতো এবং গোপন জ্ঞান রাখতো যা দিয়ে তারা সভ্যতাকে প্রভাবিত করতো। তারাই অন্যন্য সব নিদর্শন তৈরি করেছিলো যার অন্যতম হলো- মিসরের পিরামিড( অনেকের ধারনা পিরামিড তৎকালীন কোন মানুষের দারা নির্মান সম্ভব ছিল না )। যার স্থাপত্যশৈলী এবং খুটিনাটি বিষয় একবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞানীদেরও অবাক করে। এছাড়াও পিরামিডের ভেতরের অনেক স্থানই মানুষ আজ পর্যন্ত আকবিষ্কার করতে সক্ষম হয়নি।
এই আশ্চর্য নিদর্শনগুলো নির্মানে তারা এমন সব গোপন জ্ঞান ব্যবহার করেছিলো যা কখনই প্রাচীন কালের মানুষদের আয়ত্বে থাকার কথা নয়। তৎকালীন এলিট-রা এই তথ্য বা জ্ঞানগুলো পোপন রাখার রহস্য এই যে, এই জ্ঞান মানুষের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং এই অভিপ্রায় কখনই এলিটদের ছিলো না।
খ্রিস্টাব্দ প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে ফরাসি সমর্থকগনের (french crusaders) দ্বারা নয় সদস্যের ছোট একটি গ্রুপ সংগঠিত হয় Knights Templar নামে। তাদের অফিসিয়াল ব্যাখ্যা ছিলো – তীর্ধযাত্রীদের তাদের পুণ্যভূমি ভ্রমনে বাঁধা প্রদানের জন্যই গ্রুপটি সংগঠিত হয়েছে। তারা ফিলিস্তিনের জেরুসালেম পৌঁছায় এবং সেখানে নয় বছর অবস্থান করে। তারা সেখানে কিছু একটা অনুসন্ধান করছিল এবং মনে হয় তারা সেটি পেয়েও গিয়েছিল। এবং খুব দ্রুতই অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। নয় সদস্যের ছোট গ্রুপটি ক্রমান্নয়ে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। Knights Templar কি পেয়েছিলো তা রহস্যই থেকে যায়। ধরনা করা হয় এটি ছিলো Holy Grail (ডিশ, প্লেট, বা কাপ) যা খ্রীষ্ট তার সর্বশেষ নৈশভোজে ব্যবহার করেছিলেন এবং ক্রশবিদ্ধ খ্রীষ্টের ঝরে পড়া রক্ত এতে ধরে রাখা হয়েছিল।
ধারণা করা হয় Holy Grail ছিলো অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। যা আয়ত্ব করে Knights Templar রাতারাতি ইউরোপের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠনে পরিনত হয়। এই সংগঠনে যোগদান করতে হলে সব সম্পদ তাদের হাতে তুলে দিতে হতো এবং তাদের মূল টার্গেট ছিলো ইউরোপের উচ্চবংশজাত পরিবারগুলো। Knights Templar নিজেদের পবিত্র বলে দাবী করত এবং একই সময় তারা সংগ্রাম/ যুদ্ধবিগ্রহে জড়িয়ে পড়েছিলো। এজন্য তাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হতো। প্রায় দুশত বছর ধরে Knights Templar শত সহস্র বিত্তশালী ইউরোপীয় এলিটদের নিজের করে নেয়। সংগঠনটির প্রকৃত সদস্য সংখ্যা কত ছিলো তা নির্দিষ্ট করে জানা যায় না। তবে Knights Templar গোটা ইউরোপ রাজত্ব বা নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছিলো সর্ববৃহৎ প্রাইভেট/বেসরকারী ব্যাংকিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। তেরশ সাত খ্রিস্টাব্দে এসে Knights Templar কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ফ্রান্সের রাজা পোপ পঞ্চম (pope clement the fifth ) কে রাজি করতে সামর্থ হয় যে Templar তাদের রক্ষাকর্তা নয় বরং তারা তাদের ধ্বংশ করে দিচ্ছে। এটা ছিল তৎকালীন ফ্রান্সের রাজার ইচ্ছে এবং তিনি নিজেই এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদ তৈরি করেন। Knights Templar এর সর্বমোট ২৩ জন গ্র্যান্ড মাস্টার দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলেন। এবং সর্বশেষ গ্র্যান্ড মাস্টার Jacques de Molay কে ১৩১৪ সালে প্যারিসে আগ্নিদগ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
২৪ শে জুন ১৭১৭ সালে সংগঠনটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ সভা অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনে। উক্ত সভায় Freemasonry কে একটি একটি ভিন্নধর্মী সংগঠন হিসেবে দেখা যায়, যারা অবাদ তথ্য প্রবাহ নিয়ে আলোচনারত ছিলো। তৎকালীন সময়ে তারা এরূপ বহু আলোচনা সভার আয়োজন করতো যেখানে মানুষজন উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে। ১৭৩০ সালে Freemasonry আমেরিকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং খুব দ্রুতই সেখানকার সম্ভ্রান্ত/ এলিট পরিবারগুলোকে সদস্য বানিয়ে নেয়। আমেরিকার স্বাধীনতার পক্ষে স্বাক্ষর করা ৫৬ জন এলিটের মধ্যে ৫০ জনই ছিল Freemasonry এর সদস্য। জর্জ ওয়াশিংটন প্রথম অভিষেক ছিলো (First inauguration of George Washington ) একটা Freemasonic অনুষ্ঠান।
এভাবেই আমেরিকান সিক্রেট সোসাইটি নতুন দেশ গঠনে তাদের গোপন জ্ঞান কাজে লাগায়। বাভেরিয়ান (Bavarian) Freemason Adam Weishaupt , ‘Order of Illuminati ‘ নামে আরেকটি সিক্রেট সোসাইটির গঠন করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই Illuminati গোটা ইউরোপ জুড়ে দুহাজারের বেশি এলিট সদস্য গ্রহণ করে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই সংগঠনটি গঠিত হলেও ইউরোপের শাষকদের কাছে এটা একটা ক্ষতিকর সংগঠন হিসেবে প্রতিয়মান হয়। এবং Illuminati প্রতিষ্ঠার আট বছর পরই ১৭৮৪ সালে এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কার্যক্রম বন্ধ বললে ভুল হবে, এককথায় এটি পর্দার আড়ালে চলে যায়। Illuminati শুধু জড়িত ছিলো না বরং তারা ছিলো চালকের আসনে, যার কল্যানে আমরা আজ ‘যুক্তরাষ্ট্র’ দেখতে পাচ্ছি। Illuminati সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে এই সাইটে ww.illuminati-news.com এটি একটি গবেষনাধর্মী সাইট যেখানে Illuminati -কে একটি ছায়া-সরকার (The Shadow Government ) হিসেবে দেখানো হয়েছে।
Illuminati প্রতিক বা সিম্বল- পিরামিডের উপরভাগে খোলা চোখ (all seeing capstone) আমেরকিন সরকারের প্রতিক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। বিংশ শতাব্দির Illuminati-র অগ্রভাগের অন্যতম একজন ফ্রান্কলিন ডি. রুসভেন্ট (Franklin Delano Roosevelt ) ডলারের উপর একই সিম্বলের প্রচলন করে।
এই সিম্বলের উপর Annuit Coeptis এবং নিচে Novus Ordo Seclorum শব্দগুলো লিখা। অর্থাৎ নতুন ধর্মনিরপেক্ষতা/সেকুলারিজমের আগমনকে স্বাগত জানানো (Welcoming the Arrivals of the New Secular Order)।
Illuminati অন্যতম আরেকটি সিম্বল হলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা বা মশাল (Torch Light of the Flame)। বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত মশাল হলে নিউ ইয়র্কের স্টেচু অব লিভার্টি (Statue of Liberty), মার্কিনিরা একে স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করে। এই ভাস্কর্য নিউ ইয়র্কে উপহার পাঠিয়েছিলো French Freemasons প্যারিস থেকে। কন্সপিরেসী থিওরীষ্টদের মতে এই জ্বলন্ত মশাল প্রকৃতপক্ষে আমেরিকান জনগনের স্বাধীনতা প্রকাশ করে না বরং এটি এমন একটি বার্তা বহন করে যে- ‘দেখ আমরাই দৃশ্যপট পরিচালনা করছি, আমরাই সব নিয়ন্ত্রণ করছি, কিন্তু তোমরা কেউ দেখতো পাওনা।’Statue of Liberty এবং Freemasonry কন্সপিরেসী নিয়ে সাইগুলোতে বিস্তারিত জানা যাবে।
সুতরাং এটা পরিস্কার যে সিক্রেট সোসাইটিগুলো অতি প্রাচীনকাল থেকেই সংগঠিত। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার এলিটদের কার্যকলাপের সাথে বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর মিল পাওয়া যায় উভয়ের ব্যবহৃত প্রতীকগুলোর মাধ্যমে।
অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের সেই মিশরীয় সভ্যতায় তৎকালীন এলিট-গন যেই সব চিহ্ন/প্রতীক/ সিম্বল ব্যবহার করতো তা নিকট অতীত বা বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর ব্যবহৃত চিহ্ন/প্রতীক/ সিম্বলের প্রতিচ্ছবি। অর্থাৎ এটি শতাব্দীর পর শতাব্দী একটি নিরবিচ্ছিন্ন অটুট সংযোগ রক্ষা করে বর্তমানে অনুমেয় সর্বময় ক্ষমতার গোপন কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে।
যদিও অফিসিয়াল Freemasonry দাবি করে তাদের সাথে Illuminati অথবা অন্য কোন সিক্রেট সোসাইটির কোনরুপ যোগসাজস নেই। কিছু কিছু দেশে Freemasonry গোপন কোন সংগঠন নেয়। সেখানে তাদের অবস্থা অনেকটা গোপন জ্ঞান নিয়ে খোলামেলা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মত। এভাবে এগিয়ে চলছে সমগ্র পৃথিবীকে একটি বিশ্ব ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে যাওয়ার সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা। যার শুরু সেই সুদুর অতীত হতে। এ থেকে কি মুক্তির কোন উপায় নেই। আছে নিশ্চয় আছে। আর তা হল পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন মানবিক মুল্যবোধ , ধর্ম (স্ব স্ব-ধর্ম) ।
সমাপ্ত
তথ্যসূত্র : ইনফোটেক লাইফ.কম